ইফতারিতে আজ হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি খাওয়ার ইচ্ছে হল আজিমের। লকডাউন তাই একটি রেস্তঁরা থেকে হোম ডেলিভারিতে অর্ডার করলো ফ্যামিলি প্যাক। ঘরে মেইন ডিশ হিসেবে তেমন কিছু আর তৈরি হল না আজ।প্রতিদিনের মত ইফতার টেবিল সাজানো হল শরবত, খেজুর ও নানান রকম ফল দিয়ে। বিরিয়ানিটা আসেনি এখনও। ডেলিভারি বয় এর খবর নেই। ঘড়ির দিকে বারবার তাকাচ্ছে আজিম। যথাসময়ে আজান শুরু হল। শরবতের সাথে শুধু ফল দিয়েই ইফতার শুরু করল সবাই।
ফোন বেজে উঠল। আজিম রাগান্বিত স্বরে, ‘এখনকি আসার সময় হল? শুধু ফল দিয়ে ইফতার করছি আমরা; আপনার বিরিয়ানি আপনিই খান।’ ফোনটা রাখতে রাখতেই ওপাশ থেকে, ‘স্যার স্যার, আপনিতো ফল খাচ্ছেন, রোজা রেখে আমি এখনও কিছু খেতে পারিনি। পার্সেলটা নিয়ে যান প্লিজ।
মুহুর্তের মধ্যে মনটা নরম হল আজিমের। বোতলে শরবত আর কিছু খেজুর নিয়ে নিচে নামল। ডেলিভারি বয় দুঃখ প্রকাশ করল, আর শরবতের জন্য জানাল কৃতজ্ঞতা। টাকা পরিশোধের পর কিছু টিপস দিতে যাচ্ছিল আজিম। ডেলিভারি বয় হেসে দিয়ে বলল, স্যরি স্যার টিপস টা নিতে চাচ্ছি না। এটা ঠিক অহংকার না। একটু অস্বস্তি লাগে আমার। করোনায় ম্যানেজার লেভেলের চাকরিটা হারিয়েছি আমি। তাই বাধ্য হয়েই এই চাকরিটা করছি।
কয়েক সেকেন্ড নিরব আজিম। ঠিক আছে আপনার সাথে কথা বলে ভাল লাগল। আমার মোবাইল নাম্বারটা রেখে দিন। পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে আমাকে ফোন দিবেন। দেখি আপনার জন্য কিছু করতে পারি কিনা। ঠিক আছে?’ আর হ্যা পরিশ্রম তো করছেন জানি। এর মধ্যে নিজের স্কিলটা আর একটু বাড়ানোর চেষ্টা করেন। আজকাল অনেক প্রতিষ্ঠানই অনলাইনে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। দক্ষতা যত বেশি আপনার চাকরির বাজার তত বড়। এক বুক আশা নিয়ে ডেলিভারি বয় এর প্রস্থান।
আজিমের ফোন বেজে উঠল… হ্যালো… কি হলো!! কই তুমি?