নেতা কেন ব্যর্থ
দক্ষতার উপর অতিরিক্ত নির্ভর করা আপনার নেতৃত্বগুণকে বাঁধাগ্রস্ত করতে পারে এবং আপনার কর্মক্ষেত্রে এটির নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে । চলুন জেনে নেই আমরা এই সমস্যাটি কীভাবে এড়াতে পারি। একটি অর্গানাইজেশনে লিডারদের কেন চাকরি থেকে ফায়ার করা হয়? গবেষণা থেকে জানা যায়, যে লিডাররা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার বা অতিরিক্ত ব্যবহার করেন, তাদের ঝরে পড়ার আশংকা সবচেয়ে বেশি।
যারা তাদের ক্যরিয়ারের শুরুতেই সফলতার মুখ দেখে তারা তা-ই করে যে ব্যাপারে তাদের নিজস্ব দক্ষতা রয়েছে। বেশীরভাগ সময় তারা তাদের নিজেদের বিদ্যমান স্কিলসের পাশাপাশি অন্যান্য সেক্টরগুলোতেও দক্ষতা অর্জন করার চেষ্টা করে থাকেন। যে ব্যক্তি নিজের কাজের ব্যাপারে দায়িত্বশীল এবং কর্তব্যপরায়ণ সে ব্যক্তি খুব সহজেই প্রমোশন পেতে পারেন, কেননা তিনি নিজ পরিপূর্ণতার জন্য খ্যাতি অর্জন করেন।
কিন্তু অতিরিক্ত দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেয়ার ফলে দিনশেষে কর্মীদের প্রতি তার আচরণ হয়ে উঠতে পারে অনমণীয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়; ভালো নেতাদেরও বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে বা অতিরিক্ত দায়িত্ব কাঁধে আসার ফলে নেতৃত্বে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে এবং নেতৃত্বের দূরদর্শিতা লোপ পেতে পারে।
কেন তারা ব্যর্থ হয়?
লিডারদের ব্যর্থ হওয়ার কারনগুলোকে ৩ ভাগে ভাগ করা যেতে পারে;
১. “দুরে সরে যাওয়া” তারা যখন খুব চাপের মধ্যে থাকে তখন উদ্বিগ্নতা কমানোর স্বার্থে স্বাভাবিক সামাজিকতা থেকে সরে আসে। তারা মাঝে মধ্যেই মানসিক অস্থিরতা প্রদর্শন করে (যেমন শুরুতে উৎসাহী কিন্তু পরে হতাশ বা এমনকি ছোটখাটো বিষয় নিয়ে রাগান্বিত হয়ে যাওয়া)। প্রায়ই লক্ষ্য করা যায় তারা যথেষ্ট অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ কিন্তু অন্যদের সম্পর্কে অত্যধিক সন্দেহপ্রবণ, যা তাদেরকে অন্যদের কাছে অত্যাধিক গম্ভীর এবং ঝুঁকিপূর্ণ করে দেখাতে পারে, এর ফলে তাদের সাথে সবার দূরত্ব সৃষ্টি হয়।
২. “ওভার কনফিডেন্স” এই ব্যক্তিরা স্বভাবগতভাবেই আত্মবিশ্বাসী, আবেগপ্রবণ এবং প্রচণ্ড জেদী স্বভাবের হয়ে থাকে। চাপের মুখে তারা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কথা বলে এবং অন্যদেরকে নিজের খেয়ালখুশি অনুযায়ী চলতে বাধ্য করে, এর মাধ্যমে তারা নিজেদেরকে চাপমুক্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু এটি হিতে বিপরীত হয়ে তাদের আত্মবিশ্বাসকে অজান্তেই অহংকারে পরিণত করে।
৩. “অতি নির্ভরশীলতা” সাধারণত এই ব্যক্তিরা সব পরিস্থিতির সাথে সহজেই মানিয়ে চলতে সক্ষম হয়ে থাকে এবং কর্মক্ষেত্রে সবার মন জয় করতে কঠোর পরিশ্রম করে। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে তারা খুব সহজেই সবার সম্মান অর্জন করতে সক্ষম হয়। অন্যদিকে পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকলে অন্যদের উপর অতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, এর ফলে তারা ছোটখাটো সিদ্ধান্ত নিতেও দ্বিধাবোধ করে।