Procrastination The Thief of Time
প্রোকাস্টিনেশন শব্দটির সাথে আমরা সবাই ই কম – বেশি পরিচিত। অনেকে এটিকে অলসতা বলে থাকি। কিন্ত দুইটি জিনিস এক নয়।
যেমন ধরুন আপনাকে একটি টাস্ক কমপ্লিট করার জন্য ৭ দিন দেওয়া হল। আপনি ভাবলেন আপনার হাতে অনেক সময় আছে।ভাবতে ভাবতে আপনি কাজটি একবারে শেষ সময়ে শুরু করলেন এবং পরবর্তীতে এর জন্য আফসোস করলেন ঠিক এই জিনিসটিই -প্রোকাস্টিনেশন।
প্রোকাস্টিনেট আমরা সবাই ই কম বেশি করে থাকি; কিন্তু অনেকে এ জিনিস টি বুঝতেই পারেন না যে তারা কিভাবে সময়ের অপচয় করছে। যেমন কোন কাজ শেষ মুহূর্তের জন্য রাখা,অযথাই ঘন্টার পর ঘন্টা সোশ্যাল মিডিয়াতে সময় দেওয়া,লো প্রায়রিটি কাজে বেশি গুরুত্ব দেওয়া,সঠিক সময়ের অপেক্ষা করা ইত্যাদি।
প্রোকাস্টিনেশন কমানোর কিছু উপায় যা আপনি অবলম্বন করতে পারি:
১. সবার আগে নিজেকে ক্ষমা করুন আগের ভুলগুলোর জন্য। এটি শুধু নিজেকে মোটিভেট করার জন্য কিন্তু নয়,এর সাথে প্রোকাস্টিনেশন এর দারুন একটি সম্পর্ক আছে।ধরুন আপনি অনেক সময় ইতিমধ্যে নষ্ট করে ফেলেছেন এবং এখন কিছু সময় ই আপনার বাকি আছে কাজটির জন্য। আগে সময় নষ্ট করার জন্য আপনি এখনও আফসোস করছেন কিন্তু এর মাধ্যমে যে বাকি থাকা বর্তমান সময়গুলোও আপনার অপচয় হয়ে যাচ্ছে সেটি বুঝতেই পারলেন না। তাই আগের কথা বাদ দিন, সময় কম থাকুক, আগে হেলাফেলা করে কাজ করেছেন সেসব কথা বাদ দিন।কাজে নেমে পড়ুন দেখবেন ব্যপারটি সহজ হয়ে যাবে।
২. প্রোকাস্টিনেশনের আরেকটি বড় কারন হল,অধিক প্ল্যান করা। কাজের আগে প্ল্যান করা অবশ্যই জরুরি।কিন্তু এর জন্য বেশি সময় দিলে আপনি হয়ে যাবেন প্রোকাস্টিনেশন এর শিকার। কাজের আগে ছোট্ট করে একটি লিস্ট বানান এবং কাজে নেমে পড়ুন। কাজে নামলে সমস্যাগুলোর সমাধান এমনিতেই পেয়ে যাবেন।কাজে নামার আগে যদি আপনি ভাবতেই থাকেন এটা হলে কি হবে,ওটা হলে কি হবে তাহলে আপনার প্ল্যানিং করতে করতেই অর্ধেক সময় চলে যাবে।
৩. সবচেয়ে কঠিন কাজ গুলো সবচেয়ে আগে শুরু করুন। হাতে ৫ টা কাজ থাকলে দেখুন কোনটা সবচেয়ে বেশি কঠিন,কোনটিতে বেশি সময় লাগবে এবং সেটি দিয়েই শুরু করেন।দিনের শুরুতে মাইন্ড ফ্রেশ থাকে,ক্লান্তি কম আসে। তাই কাজগুলো তেও অধিক মনোযোগ দিতে পারবেন।
৪. কোন কাজে সমস্যায় পড়লে তা তখন ই সমাধান করুন।আমরা সাধারণত কোন সমস্যায় পড়লে ঘাবড়িয়ে যাই। ভাবতে শুরু করি যে পরে করলে হয়ত সমাধান পেয়ে যাব।কিন্তু এমনটি নয়। পরের দিনের জন্য রাখলে আপনার ফ্লো নষ্ট হয়ে যায়,সমস্যাগুলো নিয়ে আবার নতুন করে ভাবতে হয়। তাই যখনই সমস্যায় পড়বেন সেটি সমাধান না করে উঠবেন না।
৫. কাজের ইমেডিয়েট রেজাল্ট চিন্তা না করলে আমরা আলসেমি শুরু করি। যেমন ধরুন আপনার এক্সাম অনেকদিন পর তাই আপনি এখন সেটি নিয়ে টেনশন করছেন না,ফলে আপনার পড়াও হচ্ছে না।কিন্তু এক্সাম কয়দিন পরে থাকলে আপনি ঠিকই তড়িঘড়ি করে পড়তে বসতেন। অর্থাৎ আপনাকে একটি ইমেডেয়িট রেজাল্ট সেট করতে হবে। যার ফল আপনি তখনই পেয়ে যাবে।সেটি করতে পারলে দেখবেন প্রোকাস্টিনেশন অনেকটাই কমে গেছে।
উপরের মেথডগুলো ব্যবহার করে আপনি প্রোকাস্টিনেশন আগের থেকে কিছুটা হলেও কমাতে পারবেন। সময় থাকতে সময়ের সদব্যবহার করুন এবং নিজেকে প্রোডাক্টিভ রাখুন।