লাভের বিপরীত শব্দ ক্ষতি কিন্তু বলুন তো সুদের বিপরীত শব্দ কি?
লাভের বিপরীত শব্দ ক্ষতি কিন্তু বলুন তো সুদের বিপরীত শব্দ কি? গুগল সার্চ করেও কিছু খুঁজে পেলেন কি? ইসলামিক ব্যাংকিং বা ইসলামিক ফিন্যান্সের কথা শুনলে প্রথমেই অনেকে যে সিদ্ধান্তে উপনীত হয় সেটা হচ্ছে যাহাই সুদ তাহাই মুনাফা, পার্থক্য শুধু এটুকুই যে ইসলামিক ব্যাংকগুলো ইসলাম শব্দটিকে ঢাল বানিয়ে তার আড়ালে সুদের কারবারই করছে। এই কথাটির পিছনে কিছু কারণ খুঁজে পাওয়া যেতেই পারে, কিন্তু ঢালাওভাবে ইসলামিক ফাইন্যান্সকে এই দোষে সাব্যস্ত করাটা কতটা যুক্তিযুক্ত?
আল্লাহ তা’আলা সূরা যুমারের আয়াত নাম্বার ৯ এ বলেছেন; “যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান? চিন্তা-ভাবনা কেবল তারাই করে, যারা বুদ্ধিমান।”
১৯৮২ সালে UK ইসলামিক ব্যাংকিং চালু করে এবং ২০০৬ এ ইসলামিক ফিন্যান্স এর উপরে বিভিন্ন উচ্চতর কোয়ালিফিকেশন্স বা ডিগ্রি চালু করে। ইসলামিক ফাইন্যান্স এবং ব্যাংকিং রিলেটেড বিষয়গুলো নিয়ে এডভান্স রিসার্চের মাধ্যমে ইসলামিক ফাইন্যান্সের অন্তর্নিহিত গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারায় ২০১৪ সালেই প্রথম ইসলাম প্রধান নয় এমন দেশ হিসেবে সভরিন গ্রিন সুকুক ইস্যু করে UK, এবং Singapore – ও এই তালিকায় খুব একটা পিছিয়ে নেই।
আমাদের দেশের জনগণের মধ্যেও দিন দিন ইসলামিক ফাইন্যান্স নিয়ে সচেতনতা গড়ে উঠছে, তারা এখন শুধুমাত্র ইসলাম নামধারী যেকোনো একটি ব্যাংক ও ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউট দেখেই টাকা ইনভেস্ট করছে না বা কনভেনশনাল ব্যাংক থেকে ইসলামি ব্যাংকিং প্রোডাক্ট বিনা প্রশ্নে লুফে নিচ্ছে না। বরং তারা এখন প্রশ্ন করছে যে আসলেই এই সকল ব্যাংকিং প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে ইসলামিক শরীয়াহ কতখানি বাস্তবায়ন হচ্ছে? কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এই প্রশ্ন যারা করছেন তারা এবং যারা এর উত্তর দিচ্ছেন তাদের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। এর প্রধান কারণ ইসলামিক ফাইন্যান্সের ব্যাপারে তাদের পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকা।জনগণ এবং সরকারের রেগুলেটরি সংস্থার সচেতনতা ও ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে ইসলামিক ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউটগুলো তাদের কার্যক্রম আরো বেশি শরীয়াহ সম্মত করার উপায় খুঁজছে। একইসাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে একের পর এক ইসলামিক ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন, এছাড়াও কনভেনশনাল ব্যাংকগুলোও ইসলামিক উইন্ডো খুলে গ্রাহকদেরকে শরীয়াহ সম্মত ব্যাংকিং সেবা দিতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু যোগ্য লোকবলের অভাবে এই সেক্টর বার বারই বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছে।